গণঅভ্যুত্থানের পরের বাংলাদেশ কোন দিকে যাবে, সেইটার অনেকখানিই নির্ভর করবে: সংবিধানের ওপর। অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান সংস্কারের জন্য একটা কমিশন গঠন করেছিল। সেই কমিশন একটা প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেই প্রতিবেদনে অনেকগুলো সুপারিশ আছে। এই সুপারিশ চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নয়। সরকার এখন জাতীয় ঐক্যের জন্য একটা প্রচেষ্টা করছে। জাতীয় ঐক্যমত্যের মাধ্যমে এই সুপারিশগুলো পুরোটা বা আংশিক বাস্তবায়িত হতে পারে।
আবার, আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোও সংবিধান সংস্কারের অনেকগুলো রূপরেখা দিয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞগণও অনেক রূপরেখা তাঁদের লেখায় প্রকাশ করছেন। জাতীয় ঐক্যমত্য প্রক্রিয়ায় দলগুলোর কিংবা কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের প্রস্তাবও চূড়ান্ত হতে পারে।
যাহোক, এই প্রস্তাবগুলোর কোনটা বাস্তবায়িত হলে তার কী প্রভাব পড়বে, কোন প্রস্তাবে কী উপকার হবে, কী অপকার হবে, কী সুবিধা আছে, কী অসুবিধা আছে, কী চ্যালেঞ্জ আছে, এইগুলো আমাদের জানাটা খুব খুব প্রয়োজন। আদৌ সংবিধান কিংবা রাষ্ট্রের সংস্কার দরকার আছে কি না, কিংবা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ঠিক কোথায় কোথায় সংস্কার প্রয়োজন এইসব প্রশ্নগুলোও আসছে সচেতন নাগরিক মহলে।
আমাদের রাজনীতিবিদদের জন্য যেমন প্রয়োজন, সাধারণ নাগরিকদের জন্যও তেমনই প্রয়োজন, বিশেষভাবে প্রয়োজন চাকরি-প্রার্থীদের জন্য। কারণ, এই প্রশ্নগুলোর ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।
এই প্রশ্নগুলোর সবচেয়ে নিরপেক্ষ উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে একটি গবেষণাগ্রন্থে। ‘সংবিধানের পোস্টমর্টেম: পর্যালোচনা, বিশ্লেষণী ও সংস্কারের রূপরেখা’ নামক এই গ্রন্থটিতে সংবিধান সংস্কারের লক্ষ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞগণ যেসব প্রস্তাব করেছেন, সেইসব প্রস্তাবের পক্ষের এবং বিপক্ষের সমস্তযুক্তি একত্র করা হয়েছে। এরপর আর.জি.এ উইলিয়ামস এর ‘এলিমিন্যাটিং র্যাশনালাইজ্যাশন পদ্ধতির অনুসরণে একটা নতুন উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ায় প্রতিটি প্রস্তাবের নেতিবাচক দিকগুলোকে বাদ দিয়ে ইতিবাচক দিকগুলো গ্রহণ করার কৌশল উদ্ভাবন করেছি। অতপর, নিরপেক্ষভাবে বিবদমান প্রস্তাবগুলোর সমাধানের কয়েকটি করে সমাধান সেট প্রস্তাবনা করেছি।
সুপ্রিয় সুধী, সংবিধান সংস্কার মানে সরকার ব্যবস্থা, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদ, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, ইত্যাদি সমস্ত ব্যবস্থার সংস্কার। সুতরাং, সংবিধানটি ভালোভাবে সংস্কার করা হলে সেটার সুফল ভোগ করবে সমস্ত জনগণ। আর, এতে যদি কোনো লুপহোল থেকে যায়, সেটার কুফল ভোগ করবে, জনগণের সমস্ত অংশ।
সুতরাং, সংবিধানের চূড়ান্ত সংস্কার হওয়ার আগেই এই ব্যাপারে সচেতন হওয়া আমাদের প্রত্যেকের জরুরি। এই গ্রন্থটি আপনাদের সচেতন হতে অনেক অনেক বেশিই সহায়তা করবে।
এই বইটি বিশেষভাবে সহায়তা করবে চাকরি প্রার্থী ভাই ও বোনদেরকে। যারা বিসিএস-এর লিখিত পরীক্ষা দেবেন, তাঁদের বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে সংবিধান, সরকার ব্যবস্থা ও নির্বাচন অধ্যায়গুলো হতে ৬০ নম্বরের প্রশ্ন আসতে পারে। গণঅভ্যুত্থানোত্তর বাংলাদেশে রাষ্ট্রসংস্কার বিষয়ে রচনাও আসতে পারে বাংলা বা ইংরেজিতে। ভাইভায়ও এই ধরণের প্রশ্নগুলো গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংক ও অন্যান্য চাকরির পরীক্ষায় এরকম প্রশ্ন আসতে পারে।
সুতরাং, এই বইটি চাকরিপ্রার্থীদের জন্যও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
সংবিধানের পোস্টমর্টেম : গন্থটিতে কী আছে?
সংবিধানের পোস্টমর্টেম : বইটি কাদের কাজে লাগবে?