সংবিধানের পোস্টমর্টেম গ্রন্থটি কেন পড়বেন, সেটা বোঝার জন্য জানা প্রয়োজন এই গ্রন্থটিতে কী আছে?
আপনাদের বোঝার সুবিধার জন্য এখানে স্পষ্ট করে দিচ্ছি: এখানে মোটা দাগে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর আছে:
(১) সংবিধান পুনর্লিখন নাকি সংশোধন কোনটা দরকার? কেন দরকার? কী কী উপায়ে সেটা বাস্তবায়ন করা যেতে পারে?
(২) রাষ্ট্রপতির নির্বাচনপদ্ধতি, মেয়াদ, ক্ষমতা ও দায়িত্ব পরিবর্তন নিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন, বিভিন্ন দল ও বিশেষজ্ঞগণ যেসব প্রস্তাব করেছে, সেই প্রস্তাবগুলোর কোনটার কী সুবিধা ও কী অসুবিধা? বিভিন্নপক্ষের বিবদমান প্রস্তাবগুলোর সমন্বয় করে কীভাবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সুরাহায় আসা যেতে পারে?
(৩) প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচনপদ্ধতি, মেয়াদ, ক্ষমতা ও দায়িত্ব পরিবর্তন নিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন, বিভিন্ন দল ও বিশেষজ্ঞগণ যেসব প্রস্তাব করেছে, সেই প্রস্তাবগুলোর কোনটার কী সুবিধা ও কী অসুবিধা? বিভিন্নপক্ষের বিবদমান প্রস্তাবগুলোর সমন্বয় করে কীভাবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সুরাহায় আসা যেতে পারে?
(৪) সংসদ সদস্য-পদে পদে নির্বাচনপদ্ধতি, মেয়াদ, ক্ষমতা ও দায়িত্ব, ফ্লোরক্রসিং (অনুচ্ছেদ ৭০) পরিবর্তন নিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন, বিভিন্ন দল ও বিশেষজ্ঞগণ যেসব প্রস্তাব করেছে, সেই প্রস্তাবগুলোর কোনটার কী সুবিধা ও কী অসুবিধা? বিভিন্নপক্ষের বিবদমান প্রস্তাবগুলোর সমন্বয় করে কীভাবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সুরাহায় আসা যেতে পারে?
(৫) স্থানীয় সরকারগুলোর গঠন, নির্বাচন, মেয়াদ, ক্ষমতা ও দায়িত্ব পরিবর্তন নিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন, বিভিন্ন দল ও বিশেষজ্ঞগণ যেসব প্রস্তাব করেছে, সেই প্রস্তাবগুলোর কোনটার কী সুবিধা ও কী অসুবিধা? বিভিন্নপক্ষের বিবদমান প্রস্তাবগুলোর সমন্বয় করে কীভাবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সুরাহায় আসা যেতে পারে?
(৬) নির্বাচন কালীন সরকার ব্যবস্থার গঠন, নির্বাচন, মেয়াদ, ক্ষমতা ও দায়িত্ব পরিবর্তন নিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন, বিভিন্ন দল ও বিশেষজ্ঞগণ যেসব প্রস্তাব করেছে, সেই প্রস্তাবগুলোর কোনটার কী সুবিধা ও কী অসুবিধা? বিভিন্নপক্ষের বিবদমান প্রস্তাবগুলোর সমন্বয় করে কীভাবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সুরাহায় আসা যেতে পারে?
(৭) প্রস্তাবনা, রাষ্ট্রের নাম (নাগরিকতন্ত্র/ জনগণতন্ত্র/ প্রজাতন্ত্র), রাষ্ট্রের ধরণ (এককেন্দ্রিক বা যুক্তরাষ্ট্রীয়), রাষ্ট্রধর্ম, জাতির পিতা, রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি, নাগরিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার, সাংবিধানিক পদে নিরপেক্ষ নিয়োগ ইত্যাদি নিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন, বিভিন্ন দল ও বিশেষজ্ঞগণ যেসব প্রস্তাব করেছে, সেই প্রস্তাবগুলোর কোনটার কী সুবিধা ও কী অসুবিধা? বিভিন্নপক্ষের বিবদমান প্রস্তাবগুলোর সমন্বয় করে কীভাবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সুরাহায় আসা যেতে পারে?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার জন্য গ্রন্থটিকে ১১টি অধ্যায়ে এবং প্রতিটি অধ্যায়কে অনেকগুলো পয়েন্ট, সাবপয়েন্টে ভাগ করা হয়েছে।
গ্রন্থটির ১ম অধ্যায়ে গবেষণার প্রেক্ষাপট, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গ্রন্থটির ২য় অধ্যায়ে গ্রন্থটির গবেষণাপদ্ধতি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ৩-১১তম অধ্যায়ে সংবিধান সংস্কার-সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাবাদির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বিশ্লেষণী অধ্যায়গুলোকে ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন পরিচ্ছেদে বিভক্ত করে বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি বিশ্লেষণী বিষয় নিম্নোক্ত ৩ ধরণের উপাদান নিয়ে গঠিত:
(১) সাহিত্য পর্যালোচনা: এই অংশে আছে:
(ক) বিদ্যমান সংবিধান সম্পর্কে গবেষক, বিশ্লেষক ও লেখকগণের সমালোচনা ও বিশ্লেষণী উদ্ধৃতি।
(খ) সংবিধান সংস্কারে বিভিন্ন গবেষক, বিশ্লেষক ও লেখকগণের পরামর্শ ও প্রস্তাবাদি।
(গ) সংবিধান সংস্কারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পরিকল্পনা ও প্রস্তাবাদি।
(ঘ) সংবিধান সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন কমিশনের সুপারিশ।
(২) জরিপ বিশ্লেষণ: সংবিধান সংস্কার-সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নে জনগণের মতামত কেমন, তা পর্যবেক্ষণের জন্য ২ দফা জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে, যার ফলাফল এই অংশে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
(৩) যৌক্তিক বিশ্লেষণ: সংবিধান সংস্কারের লক্ষ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন পক্ষের পরস্পর-বিরোধী প্রস্তাব ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এইসব বিবদমান বিষয়ের পক্ষে এবং বিপক্ষে বস্তুনিষ্ঠভাষায় যথোপযুক্ত নিরপেক্ষতাসহ যুক্তি সংযোজন করা হয়েছে এই অংশে। বিভিন্ন পক্ষের উপস্থাপিত সকল যুক্তি এবং ‘শেখার সংগ্রাম’ কর্মসূচির আলোচনায় প্রাপ্ত বিভিন্ন যুক্তিসমূহ পাশাপাশি রেখে একত্র করা হয়েছে। সবশেষে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে, বিবদমান পরিস্থিতি হতে উদ্ধার পেতে সম্ভাব্য কিছু সমাধান সেট ও কিছু উদ্ভাবনী সমাধানের ফর্মুলা দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষেত্রে আর. জি. এ. উইলিয়ামস বর্ণিত ‘এলিমিনেটিং র্যাশনালাইজ্যাশন’ ও সেইজ হ্যান্ডবুক অব কোয়ালিট্যাটিভ ডেটা অ্যানালাইসিস-এ বর্ণিত বিভিন্ন কৌশলসমূহ অনুসরণ করা হয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানের পরের বাংলাদেশ কোন দিকে যাবে, সেইটার অনেকখানিই নির্ভর করবে: সংবিধানের ওপর। সুতরাং, সংবিধানের চূড়ান্ত সংস্কার হওয়ার আগেই এই ব্যাপারে সচেতন হওয়া আমাদের প্রত্যেকের জরুরি। এই গ্রন্থটি আপনাদের সচেতন হতে অনেক অনেক বেশিই সহায়তা করবে।
এই বইটি বিশেষভাবে সহায়তা করবে চাকরি প্রার্থী ভাই ও বোনদেরকে। যারা বিসিএস-এর লিখিত পরীক্ষা দেবেন, তাঁদের বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে সংবিধান, সরকার ব্যবস্থা ও নির্বাচন অধ্যায়গুলো হতে ৬০ নম্বরের প্রশ্ন আসতে পারে। গণঅভ্যুত্থানোত্তর বাংলাদেশে রাষ্ট্রসংস্কার বিষয়ে রচনাও আসতে পারে বাংলা বা ইংরেজিতে। ভাইভায়ও এই ধরণের প্রশ্নগুলো গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংক ও অন্যান্য চাকরির পরীক্ষায় এরকম প্রশ্ন আসতে পারে। সুতরাং, এই বইটি চাকরিপ্রার্থীদের জন্যও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুন
সংবিধানের পোস্টমর্টেম বইটি কেন পড়বেন, আরো জানতে এখানে ক্লিক করুন।
সংবিধানের পোস্টমর্টেম বইটি কাদের জন্য দরকার, তা জানতে এখানে ক্লিক করুন।/