লাল আমার পছন্দ,
আমার প্রিয়, আমার প্রেম,
আমার কথা, কবিতা, ছন্দ!
মুগ্ধ হলেম,
আমি প্রেমে পড়লেম_
অগ্নিরং, রক্তরং,
মৃত্যুসং, নৃত্যঢং_
কঙ্কালের।
লাল সুমুখে,
লাল চুমুকে,
হাসলাম বরং
অট্টহাসি,
বড্ড বেশি
অহঙ্কারের।
আমরা ন্যায়ের জন্য হয়েছি লাল,
জয়ের জন্য করেছি ইন্তেকাল,
বাহান্নে, ঊনসত্তরে,
একাত্তরে, অকাতরে
দিয়েছি প্রাণ।
বাঁচাইতে মানুষের প্রাণ, দেশের সম্মান,
গাহিয়া সাম্য, ন্যায়বিচার ও আত্মসম্মানের গান,
নিজের জান, করেছি কোরবান,
আমাদের প্রাণদানে আইয়ুব, ইয়াহিয়া খান,
হয়েছে খান খান!
পাকিস্তানের গান গেয়ে, একাত্তরে শকুনেরা যেমন এসেছে ধেয়ে,
মুক্তিযুদ্ধের গান গেয়ে, বাঙালির রক্ত খাচ্ছে তেমন শেখ মুজিবের মেয়ে,
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পাতা ধুয়ে খেয়ে, ছাত্রলীগ গেছে সন্ত্রাসী হয়ে,
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের গায়ে, হাত তুলেছে কার আস্কারা পেয়ে;
হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের ডাকে রাজাকার?
একাত্তরে যে ছিল স্বাধীনতার রূপকার, চব্বিশে দেখো রূপ তার কন্যার,
রাজাকার চরিত্র যার, সেই ডাকে আমাকে-তোমাকে রাজাকার!
চেয়েছিলাম তো শুধু সাম্যের অধিকার, যা তো মুক্তিযুদ্ধেরই অঙ্গীকার,
প্রতিদান পেলাম তাঁর, কোটার সাময়িক সংস্কার, হামলা-মামলা-হুঙ্কার,
আর প্রাণনাশের অঙ্গীকার।
রংপুরে, চাঁটগায়, কুমিল্লায়, ঢাকায়,
এমনি করিয়ে সমগ্র বাংলায়,
আমার ভাইয়ের ধরেছে টুঁটি রক্ত ঝড়েছে লাল,
ইন্তেকালকে ইস্তেকবাল!
সেই লালের নেশায় নিলাম ছুটি,
আমরা ক’ভাই পিঠাপিঠি!
লালের আগুন জ্বলল দ্বিগুণ,
দেখলাম যখন নিজের ভাইয়ের লাল;
নিজকে করলাম খুন;
দ্রোহ হলো দ্বিগুণ,
শ্রাবণে জাগলো ফাগুন;
রক্তসাগরে ডুববে শকুন ,
লালের জন্য দিচ্ছি লাল,
লাল দিয়েই লিখ মহাকাল!
লাল আমার বাংলা ভাষা,
লাল আমার বাংলাদেশ,
লাল আমার পতাকা, পরিচয়, ভালোবাসা;
লাল আমার মা, আমার মায়ের আদেশ!
বাংলার জন্য হচ্ছি লাল,
বাংলায়ই লিখ মহাকাল!
রচনার প্রেক্ষাপট
এই কবিতাটিরই সুরে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে একটি কবিতা লিখেছিলাম ২০১২ সালে। ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনে একদিনে ৬ শিক্ষার্থী নিহত হলে উক্ত কবিতার সুর, ছন্দ ও কথা সংস্কার করে এই কবিতার প্রথম খসড়া প্রস্তুত করা হয়। ৫ আগস্ট ২০২৪ জয়লাভের দিনই কয়েকটি শব্দ সংস্কার করা হয়।