ধূর্ত এক ক্ষুধার্ত শকুন ঐ যে দেখো আসছে উড়ে,
তুমি কি আজি ব্যথিত খুবি তার ক্ষুধার কাতরে?
তুমি কি জানো, কী আছে সুপ্ত তার ঐ বিমূর্ত মনে?
তোমায় মেরে খুবলে খেতে কি জাগবে দয়া তার প্রাণে?
শকুন তার অস্তিত্বের জন্য তোমার পিছে ধায়;
পৃথিবীতে নিজেকে বাঁচানো তোমার একারই দায়।
প্রাণের এরকম জগদ্ব্যবস্থায় কোনো নীতি নেই,
নৈতিকতা নেই, আদর্শ নেই, আর বিচারব্যবস্থাও নেই।
দেখো, ইসরায়েলীরা ফিলিস্তিনীদের কতো মারে!
নৈরাজ্যের এই বসুন্ধরায় কে যায় তার বিচারে?
রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে যেমন আছে ব্যবস্থা-বিচার,
আন্তর্জাতিক কারবারে তেমন কিছু কি আছে তার?
থুকিডিডিস, ম্যাকিয়াভেলি, এবং হ্যান্স জে. মর্গেন্থু
বোঝালেন: রাষ্ট্রসমূহও যেন একেকটা জন্তু;
অস্তিত্বের লড়াইয়ে প্রত্যেকে নিতান্ত স্বার্থপর,
আর বিশ্বব্যবস্থায় রাষ্ট্রই মুখ্য কারিগর।
ওয়াল্টজ্ বললেন: এই বিশ্বই নৈরাজ্যমূলক,
পূর্ণ শক্তিসাম্যই বিশ্বে আনতে পারে পুলক;
স্বার্থেও কারণে নৈতিকতা সদা ভাষা বদলায়,
আদর্শের আশা ওল্টায়, রাষ্ট্রের খাঁচা পাল্টায়।
এ বাস্তববাদকে সওয়াল করে বহুত্ববাদ:
রাষ্ট্র ব্যতীত মানবশক্তি কি সম্পূর্ণ বরবাদ?
বিশ্বে কোনো রাষ্ট্র একক, যৌক্তিক ব্যক্তি নয়,
বিভিন্ন ব্যক্তি, স্বার্থ ও মতে প্রভাবিত হয়;
তুমি যদি না হও যথেষ্ট জাগ্রত দৃঢ় সচেতন,
তোমার হিস্যার অধিকার মেরে খাবে অন্যজন।
রাষ্ট্র নিজেই কখনো ভ্রষ্ট ও দুর্নীতিগ্রস্ত হলে,
তোমার হক মেরে খাবে শাসক-কর্পোরেট মিলে।
অকস্মাৎ, ধূর্ত কোনো শেয়াল যদি ধার্মিক সাজে,
সে ধর্মে মুরগির ইমান-এক্বিন আসবে কার কাজে?
যার যার অস্তিত্বের স্বার্থে আজ হও সচেতন,
কখনো কাউকে কোরো না বিশ্বাস, অন্ধের মতন।
পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে আর এ মহাবিশ্বে,
আজ শুধু ব্যক্তি-স্বার্থই দেখি যে সকল সচল দৃশ্যে!
সামষ্টিক স্বার্থ যবে পূর্ণভাবে উর্দ্ধে স্থান নেবে
ব্যক্তিস্বার্থেরÑ বিশ্ব সেদিন নিশ্চয়ই সুন্দর হবে।
যে রাষ্ট্রে সুরক্ষিত নয় তোমার কোনো অধিকার,
সে রাষ্ট্র কি আসলেই তোমার? ভেবে দেখো বারংবার।
তাই আজ জনতার মালিকানায় রাষ্ট্র ফের গড়ো,
তোমার অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রসংস্কারে লড়ো।
রাষ্ট্র তোমার ব্যক্তিগত আর সামষ্টিক স্বার্থ,
রাষ্ট্র তোমার অস্তিত্ব, প্রেম, জীবন ও তার অর্থ।
রচনাকাল: ১৬ জুলাই ২০২৪। সর্বশেষ সম্পাদনা ৭আগস্ট ২০২৪
ছন্দ: অক্ষরবৃত্ত, পূর্ণ পঙক্তি: ১৮ মাত্রা
রচনার প্রেক্ষাপট