(ক) বন্দনা
প্রথমে বন্দনা করি খোদা তা’লা নাম
যার বলেই এ গান শুরু করিলাম।
এবারে বন্দনা করি যত গুণীজনÑ
এ গানে রসদ দিছে করিয়া চিন্তন।
এবারে বন্দনা করি পিতা আর মাতা,
যাদের ঘরে পালিল আমারে বিধাতা।
এবারে বন্দনা করি হে পাঠকগণ,
আমল করিবে যারা করিয়া শ্রবণ;
আর দেশপ্রেমে যারা এ গানে জাগিবে,
তাদের চরণতলে সালাম রহিবে।
(খ) বান্দার খান্দান ও খায়েস
সিরাজগঞ্জ জেলায় সলঙ্গা থানায়,
আখন্দের ঘর আছে পুস্তিগাছা গায়।
আমজাদ-ডালিমের শান্ত ছোট্ট নীড়ে,
রাজা আজাদ আখন্দ জন্মলাভ করে।
একদা ইতিহাসের মোহনায় বসে,
আজাদ রচিল গীত মনের খায়েসে।
দিবাস্বপ্নে কবি ভাবেÑ ইতিহাস মনে,
এ গীত লিখিলে লাভ পাবে জনগণে।
(গ) স্বর্গ পর্ব
আলমে আরওয়ায় রুহ সৃষ্টি করে
তকদির দিল খোদা সবার অন্দরে।
কে কোথা গড়িবে রাজ, করিবে বিরাজ;
রচিল সবকিছুর জেনেটিক সাজ।
(ঘ) মর্ত্য পর্ব
বাবর হলো স¤্রাট মোগলের বংশে,
হুমায়ুন শাসিলেন তার কিয়দংশে।
তার পুত আকবর পরাক্রমশালী,
বাংলা সালতানাতে করিল দখলি।
বারভুঁইয়ার দল নাহি দিবে ছাড়,
খÐখÐ যুদ্ধে যুদ্ধে দেশ ছারখার।
জাহাঙ্গির নিয়োজিল ইসলাম খানে,
আসন নিল ঢাকায় রাজধানী এনে।
জাহাঙ্গিরনগরের পত্তন করিল।
বীরত্বে সব বিদ্রোহ দমন করিল।
গড়িল মুসলিমের মধ্যবৃত্ত ঘর,
তারা হলো মোগলের শক্তির আকর।
পীর-দরবেশগণ তখনো আসিল,
কেতাবি পাঠশালাও আসন লইল।
তবুও বিদ্রোহে কাঁপে বুলগাকপুর,
সুবাদারের জিহŸায় বিদ্রোহের সুর।
আলমগীরের পর মোগল দুর্বল,
বাংলার নবাব হলো স্বাধীন-সবল।
মোগলশাহী রইল কাগজে-কলমে,
নবাব শাসন করে নিজ আনজামে।
(ঙ) শ্রæতিফল
দিনদুনিয়ার প্রভু খোদা দয়াময়,
জিন্দেগির সবকিছু তার বলে হয়।
আমরা সব পুতুল, খোদা কুশীলব,
তদিচ্ছায় নাচে গায় জীব-জড় সব।
সমুদয় ক্ষমতার খোদাই মালিক;
তদিচ্ছায় লোকে পায় ভালো-মন্দ দিক।
স্থায়ী নয় কোনো রাজ এই দুনিয়ায়;
আখেরি জিন্দেগি গড়ো, বন্দিয়া আল্লায়।
সাহিত্যশৈলী: মধ্যযুগের অন্যতম শক্তিশালী সাহিত্যধারা মঙ্গলকাব্য। যদিও সুলতানি আমলে কানাহরি দত্তের হাত ধরে এই ধারার সূচনা, এ ধারার পূর্ণ বিকশিত হয় মোগল আমলে; এবং চর্চিত হয় তারপরেও। তাই মোগল যুগের কাহিনী বর্ণনায় বেছে নেওয়া হয়েছে মঙ্গল কাব্যের গঠনরীতিকে। মঙ্গল কাব্য অনুসারে এ কাব্যে আছে ৫টি পর্ব: বন্দনা, বান্দার খান্দান (কবি পরিচয়), স্বর্গখÐ ও মর্ত্য খÐ; এবং অক্ষরবৃত্ত রীতির ১৪ মাত্রার পঙক্তি, যা আবার ৮+৬ পর্বে বিভক্ত করা যায়। এই কাব্যের পটভ‚মির ইসলামিক চরিত্র অধিকতর প্রস্ফ‚টিত করার লক্ষ্যে এ কাব্যের কিছু গাঠনিক ব্যাপারে ইসলামিকরণ করা হয়েছে; যার ফলে শ্রæতিফলের প্রস্তাবে দেবদেবীর পূজারীতির বদলে প্রকাশিত হয়েছে ইসলামি ইমানের মূল কথা।
রাজা আবুল কালাম আজাদ
Raja Abul Kalam Azad is a post-modern researcher, writer, journalist, environmental activist, and teacher. He completed his bachelor's and master's degrees in disaster management at the University of Dhaka. His various research articles have been published in reputed international journals. Currently, he is working as a teacher at a government school and serving as the coordinator of the Disaster Economics Unit of Disaster Perception, a Dhaka-based organization. He is the President of the Initiatives for Bangladesh Reform Research (IBRR), Member Secretary of Bangladesh Sangskritik Andolon, and Secretary General of 'Muktatma Samiti' and one of the Members of the Independent Bangla Editorial Board.