জাগো বাংলাদেশ জাগো

জাগো বাংলাদেশ জাগো

জাগো বাংলাদেশ জাগো!

বাঁচতে যদি চাও এবার বাঁচার জন্য জাগো,

জাগো বাংলাদেশ জাগো!

জাগো জাগো জাগো।।

 

চোখ মেলে দেখো এবার:

২৫ মার্চের মতো হায়নার দল ফিরে এসেছে আবার ,

এবার মিথ্যে স্বাধীনতার মিথ্যে মেকি জাল বুনে দেখো কী করেছে কারবার!

 

সবার সাম্য, সুবিচার, সুমর্জাদা ও স্বাধীকারের জন্য ১৯৭১ সালে

মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সকল বাংলাদেশি ঐক্যবদ্ধ যুদ্ধের ফলে,

আপামর বাংলাদেশির রক্তে কেনা সেই মুক্তিযুদ্ধের বুলি

ব্যবহার হচ্ছে আজ ৯৯% বাংলাদেশির বিরুদ্ধে;

সকল বাংলাদেশির ট্যাক্সে কেনা সেই বন্দুক-গুলি,

ব্যবহার হচ্ছে আজ আমাদেরই জনগণের বিরুদ্ধে?

 

জাগো বাংলাদেশ জাগো!

জাগবার যদি না পারো এবার বাংলাদেশ ছেড়ে ভাগো।

জাগো বাংলাদেশ জাগো!

জাগো জাগো জাগো।।

 

এই হায়েনার দাঁত দেখো এহিয়ার দাঁতের চেয়ে বড়,

এই হায়েনা রুখতে এবার বাংলাদেশ ফের গড়ো।

 

হে মহান বীরের জাতি,

হে মহান তিতুমীরের জাতি,

হে মহান ক্ষুদিরামের জাতি,

হে মহান সুভাষচন্দ্রের জাতি,

হে মহান শেরে বাংলা-সোহরাওয়ার্দীর জাতি,

হে মহান ভাসানী-বঙ্গবন্ধু-শহিদ জিয়ার জাতি,

 

হে ৫২’র জাতি, ৫৪’র জাতি, ৬৯’র জাতি,

হে মহান একাত্তরের জাতি,

 

সকল প্রকার বৈষম্য, শোষণ ও নির‌্যাতনকে

চিরতরে কবর দিতে আবার এবার জাগো,

সবকিছুর চূড়ান্ত ফয়সালা করতে শেষ বারের মতো জাগো।

 

জাগো বাংলাদেশ জাগো

জাগতে যদি না পারো এবার, পরকালে পিতাদের সাথে দেখা হলে জবাব কী দিবে গো।

জাগো বাংলাদেশ জাগো

জাগো জাগো জাগো!

 

বাঁচতে যদি চাও আবার চোখ খুলে এবার জাগো,

বীরের মান রাখতে যদি চাও জ্ঞান নিয়ে এবার জাগো।

দেখো দেখো দেখো সংবিধান খুলে দেখো:

প্রস্তাবনা খুলে দেখো:

শোষণমুক্ত সমাজ, সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার এই রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য

 

দেখো দেখো দেখো অনুচ্ছেদ ৭ খুলে দেখো:

এই দেশের মালিক জনগণ,

সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ।

 

দেখো দেখো দেখো

অনুচ্ছেদ ৮-১২ খুলে দেখো

জাতীয়তাবাদ, শোষণমুক্তির লক্ষ্যযুক্ত সমাজতন্ত্র, মানবাধিকারযুক্ত গণতন্ত্র, আর ধর্মীয় স্বাধীনতাযুক্ত ধর্মনিরপেক্ষতা

এই হলো আমাদের রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি।

 

দেখো দেখো দেখো

অনুচ্ছেদ ১৯, ২৮, ২৯ অনুচ্ছেদ বুঝে দেখো

সুযোগের সমতা আমাদের রাষ্ট্রপরিচালনা মূলনীতি এবং অধিকার।

অনগ্রসর ব্যতীত কেউ নেই আর কোনো কোটার দাবিদার।

 

মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশ্রুত সেই অধিকার চাইতে গিয়ে দেখো

এসেছে আবার সেই হায়েনার ফাঁড়া! রুখো এবার রুখো।

মুক্তি যদি চূড়ান্ত করে

পেতে চাও এ ধরে,

হায়নাকে আবার রুখো;

নয়তো মাথা ঠুঁকো;

হায়না চূড়ান্ত শিকারে

একটু একটু করে হায়নার পেটে সবটুকু ঢুকো;

শেষ হয়ে যাও, বিলীন হয়ে যাও অত্যচারের অভ্যন্তরে,

নয়তো এবার জোড়ে শোড়ে,

সর্বশক্তি বিনিয়োগ করে

বাঁচবার তরে জাগো।

 

বাঁচতে যদি চাও এবার বাঁচার জন্য জাগো,

জাগতে যদি না চাও এবার বাংলাদেশ ছেড়ে ভাগো,

ভাগতে যদি না চাও এবার জাগার জন্য জাগো।

 

দেখো বাংলাদেশ দেখো:

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ে দেখো

পাকিস্তানের অসমতা, বৈষম্য, শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে

‘সাম্য, মানবিক মর্জাদা ও সামাজিক সুবিচার’ প্রতিষ্ঠা করতে,

৩০ লাখ বাংলাদেশি রক্ত দিয়েছে,

২ লাখ মা-বোন ইজ্জত দিয়েছ্

 

দেখো বাংলাদেশ দেখো:

সেই রক্ত-ইজ্জতে কেনা স্বাধীনতা, সাম্য, সুবিচার এবার

কেড়ে খাচ্চে  খাচ্চে নতুন জানোয়ার যার হাতিয়ার

মহান মুক্তিযুদ্ধের রক্তে রাঙানো মিথ্যে-মেকি বুলি,

নির্ভেজাল স্বাধীনতার জাল বুলি,

স্বপ্নের মোড়কে মোড়ানো স্বপ্নভাঙা বুলি।

 

দেখো বাংলাদেশ দেখো:

কী করে হাইকোর্টের মিথ্যে মেকি জাল বুনে,

সংবিধানের বিরুদ্ধে অনধিকার রায় বানানো হচ্ছে,

কী করে ফাঁকাবুলিতে ফাঁকিঝুকি করা হচ্ছে,

কী করে সাধারণ অরাজনৈতিক আন্দোলনকে ইচ্ছা করে

রাজনৈতিকরণ করা হচ্ছে;

আমার টাকায় কেনা অস্ত্র দিয়ে আমার বুকে করা হচ্ছে গুলি,

আমার বিরেুদ্ধে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে আমার রক্তে কেনা বুলি;

দেখো: আমার অধিকার চাইবার সব রাস্তা কীভাবে বন্ধ করা হচ্ছে;

দেখো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কীভাবে ধূলিস্যাৎ করা হচ্ছে;

দেখো মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নকে কীভাবে নস্যাৎ করা হচ্ছে;

দেখো: সাম্য কীভাবে নষ্ট করা হচ্ছে;

দেখো আমাকে মেরে আমার মানবিক মর্জাদা কীভাবে সুরক্ষা করা হচ্ছে;

দেখো, আমার বিচারবিভাগ কীভাবে আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে।

 

দেখো বাংলাদেশ দেখো:

মুক্তিযুদ্ধের  চেতনা নিয়ে আবার জাগো,

স্বাধীনতার চূড়ান্ত সংগ্রাম ফয়সালা করতে জাগো;

বাঁচতে যদি চাও তো এবার জাগো,

মরতে যদি না চাও এবার জাগো,

দিনের পর দিন শোষিত, নির‌যাতিত হয়ে হয়ে ক্ষয়ে ক্ষয়ে প্রতিদিন না মরে,

একবারের জন্য মরতে যদি চাও তো এবার জাগো,

বাঁচার জন্য জাগো!

জাগার জন্য জাগো!

তোমার মা ও মেয়েকে বাঁচাতে জাগো,

তোমার বাবা ও ছেলেকে বাঁচাতে জাগো,

চিরতরের মনে ফয়সালা করতে জাগো;

জাগো বাংলাদেশ জাগো । ।

দ্রোহের এমন আরো কবিতা পড়ুন

১. জাগো বাংলাদেশ জাগো 

২. মুক্তবাক: সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার কাব্যরূপ 

৩. কবিতা নয়, যুদ্ধে এসো 

 

author

রাজা আবুল কালাম আজাদ

Raja Abul Kalam Azad is a post-modern researcher, writer, journalist, environmental activist, and teacher. He completed his bachelor's and master's degrees in disaster management at the University of Dhaka. His various research articles have been published in reputed international journals. Currently, he is working as a teacher at a government school and serving as the coordinator of the Disaster Economics Unit of Disaster Perception, a Dhaka-based organization. He is the Secretary General of 'Muktatma Samiti' and one of the Members of the Independent Bangla Editorial Board.

এই ধরণের আরো...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial